স্থানীয়দের চলাচলের পথ দখল করে মাটি ফেলেয় ছড়া ভরাট
নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: চকরিয়ায় ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গায় মৎস্যপ্রকল্প তৈরি করতে গিয়ে সরকারি সড়ক ও ছড়াখালের ওপর নির্মিত হাঁটাসেতু (ফুটব্রিজ) বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে মৎস্যপ্রকল্প এলাকায় নুনাছড়ি সড়কটি সরু হয়ে গেছে।
এ ছাড়া পানি চলাচলের একমাত্র প্রবহমান ছড়া মাটি ভরাটের মাধ্যমে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রায় ১০ একর জমির অনাবাদি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ভাটির দিকে পানি চলাচল বন্ধ থাকায় প্রায় ১০ কানির মতো চাষাবাদের জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে কৃষক, স্থানীয় বাসিন্দা ও ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী অন্তত ১০ হাজার মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর নুনাছড়ি ও চরপাড়ার মাঝখানে এই মৎস্যপ্রকল্প তৈরির কাজ চলছে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমানের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। ইউএনও অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তানভীর হোসেনকে দায়িত্ব দেন। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং মৎস্যপ্রকল্পের মালিকের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি নির্দেশ দেন, মাটি ফেলে ভরাট করে ফেলা ছড়ার মাটি তিনদিনের মধ্যে অপসারণসহ পানি চলাচল নির্বিঘ্ন করে দিতে।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ পরবর্তী সরেজমিন এসিল্যান্ড গিয়ে নির্দেশনা দিয়ে চলে গেলেও সংশ্লিষ্টরা সেই নির্দেশ মানেনি। সংশ্লিষ্টরা আরো বীরদর্পে মৎস্যপ্রকল্প তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় কৃষকদের মধ্যে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, হারবাং ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের চলাচলের সড়কটির নাম নুনাছড়ি সড়ক (স্থানীয়ভাবে গরু সড়ক হিসেবে পরিচিত)। এই সড়ক দিয়ে হারবাং বাজার, স্কুল, মাদরাসা, ইউনিয়ন পরিষদ, ভূমি অফিস, পুলিশ ফাঁড়ি, চরপাড়া, দক্ষিণে রাখাইনপাড়ার হাজার হাজার লোকের যাতায়াত।
হারবাং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম মিরান চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গায় মৎস্যপ্রকল্প করুক। তাতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু এই প্রকল্প করতে গিয়ে পরিবেশ নষ্ট, সড়ক সরু করা ছাড়াও ছড়াখালের পানির প্রবাহ বন্ধ করাটা অন্যায়। বিষয়টি আমার পক্ষ থেকেও উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।’
তবে ইউএনওর কাছে দেওয়া লিখিত অভিযোগে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথমে নাম রয়েছে ইশতিয়াক আহমদ চৌধুরীর। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘যে মৎস্য প্রকল্পের কথা বলা হচ্ছে সেখানে আমার কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা নেই। তাই বিষয়টি নিয়ে আমি কিছুই জানি না।’
এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘সরেজমিন বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এসি ল্যান্ডকে পাঠানো হয়েছিল। তাঁর নির্দেশ অমান্য করে যদি কাজ চলমান থাকে তাহলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়াও ওই মৎস্যপ্রকল্পে অভিযান চালানো হবে।’
পাঠকের মতামত: